‘হাসিনার আমলে গভর্নর হওয়ার প্রস্তাব পেয়েছিলাম’
আপলোড সময় :
৩০-০৩-২০২৫ ০৫:১৫:৫৫ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
৩০-০৩-২০২৫ ০৫:১৫:৫৫ অপরাহ্ন
মৃদুভাষী ড. আহসান এইচ মনসুরকে চিনে না এরকম লোক পাওয়া মুশকিল। তিনি দাগি দুর্নীতিবাজদের মনে ভয় ধরাতে পারেন ভালো। গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, হাসিনা সরকারের আমলেও তাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেননি।
গণমাধ্যমকে আহসান মনসুর বলেন, ‘সম্পদ পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টায়...যারা বাংলাদেশ থেকে এবং বিশেষভাবে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে বিপুল পরিমাণ সম্পদ সরিয়ে ফেলেছেন, তাদের ধাওয়া করে যাচ্ছি। আমরা নাম জানি, আমরা সবাই তাদের নাম জানি এবং তারাই অথবা তাদের সহযোগীরা অপতথ্য তৈরি করছে। এর একমাত্র উদ্দেশ্য হলো আমার খ্যাতি কমানো এবং আমি এমন নই।’
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টিউলিপের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের পর তিনি এ বছরের শুরুতে পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আহসান এইচ মনসুর বাংলাদেশের সম্পদ উদ্ধার প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিলেও তিনি বলছেন, টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তের সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তিনি বলেন, ‘আমি তার পরিস্থিতি নিয়ে কিছুই বলিনি। আমার প্রধান লক্ষ্য হলো যারা আমার ব্যাংক লুট করেছে।’
দ্য গার্ডিয়ান, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস ও আলজাজিরার তদন্তে দেখা গেছে, হাসিনা সরকারের কিছু সদস্য লন্ডনের রিয়েল এস্টেট খাতে শত শত কোটি পাউন্ড বিনিয়োগ করেছেন। অবশ্য তাঁদের বিরুদ্ধে এখন তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে আহসান মনসুর বলেন, ‘লন্ডন কেবল বাংলাদেশ নয়, অন্যান্য দেশ থেকেও আসা এই দুর্নীতিবাজদের জন্য অন্যতম পছন্দের গন্তব্য। এটি একটি নিরাপদ আশ্রয়, এতে কোনো সন্দেহ নেই।’
এ সময় তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘ব্রিটেন থেকে এ পর্যন্ত কত অর্থ ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে? খুব বেশি নয়।’ তবে তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য চুরি হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারের জন্য বাংলাদেশের পরিকল্পনাকে অত্যন্ত সমর্থন করে, যা খুবই কঠিন ও সময়সাপেক্ষ।
তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) ২৫ বছরেরও বেশি সময় কাজ করা আহসান এইচ মনসুর বাংলাদেশের নতুন যাত্রার শুরুতে থাকতে না পেরে নিজেকে সামলাতে পারেননি।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে সরকার আমাকে গভর্নরের পদ প্রস্তাব করেছিল। আমি বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। আমি গ্রহণ করতে পারিনি। কারণ, আমি জানতাম তিনি তিন মাসের মধ্যে আমাকে বরখাস্ত করবেন এবং তারপরে আমাকে হয় মুখ বন্ধ রাখতে হবে অথবা দেশ ছাড়তে হবে। আমি এর কোনোটিই করতে চাইনি।’
হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের গতি মনসুরকে অবাক করেছিল। তবে সরকারের পতন হবে, বিষয়টি তিনি জানতেন। তিনি বলেন, ‘আমি আমার জীবদ্দশায় এই বিপ্লব দেখব তা কখনো ভাবিনি। তিনি দেশের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন, এটি হিটলারের শাসনের মতো ছিল। তবে আমি একটি বিষয় জানতাম, তাদের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনাই তাদের পতন ডেকে আনবে। সবকিছু এতটাই দ্রুত ঘটেছে, যা কেউ ভাবতেও পারেনি। এটি একটি বড় স্বস্তি, আশা করি আরও ভালো কিছু আসছে।’
নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin
কমেন্ট বক্স